খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪

খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪ - বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে খুলনা বিভাগ অন্যতম । খুলনা বিভাগ বাংলাদেশের দক্ষিন – পশ্চিমে অবস্থিত । ২০১১ অনুষ্ঠিত আদমশুমারী খলনা বিভাগের আয়তন ২২,২৮৫ বর্গ কিলোমিটার ।

খুলনা বিভাগের জন সংখ্যা প্রায় ১৫,৫৬৩,০০০ জন । খুলনা জেলা শহর হচ্ছে খুলনা বিভাগের মূল সদর দপ্তর । খুলনা বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম জেলা শহর । প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে যথাক্রমে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম ।

খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪

আজকের এই ব্লগ পোস্টে “খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো । তাহলো চলুন শুরু করি খুলনা বিভাগ নিয়ে আলোচনা ---

খুলনা বিভাগের ভৌগোলিক অবস্থান

খুলনা বিভাগের পশ্চিমে (ভারতের) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমানা, উত্তরে রয়েছে রাজশাহী বিভাগ, পূর্বে রয়েছে ঢাকা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগ এবং দক্ষিণে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ বন নামে পরিচিত সুন্দরবন সহ বঙ্গোপসাগরের উপর রয়েছে তটরেখা । 

এটি গঙ্গা নদীর দ্বীপ বা গ্রেটার বেঙ্গল ডেল্টার (Greater Bengal Delta) একটি অংশ বিশেষ । খুলনা বিভাগের অন্যান্য নদীর মধ্যে রয়েছে ভৈরব নদী, কপোতাক্ষ নদী ও মধুমতি নদী । এছাড়াও খুলনা অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে ।

খুলনা বিভাগের জেলা কয়টি?

খুলনা বিভাগের জেলা ১০টি । যথা----

১। খুলনা জেলা ২। বাগেরহাট জেলা ৩। যশোর জেলা ৪। সাতক্ষীরা জেলা ৫। নড়াইল জেলা ৬। মাগুরা জেলা ৭। কুষ্টিয়া জেলা ৮। ঝিনাইদহ জেলা ৯। চুয়াডাঙ্গা জেলা ১০। মেহেরপুর জেলা ।

খুলনা বিভাগ কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৯৪৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাওয়ার পর তখনকার পূর্ব পাকিস্তান সরকার দেশ পরিচালনার সুবিধার্থে ঢাকা, রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম বিভাগ গঠন করে । বর্তমান খুলনা অঞ্চল সেই সময়ে গঠিত রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত ছিলো ।

১৯৬০ সালে তদানিন্তন পাকিস্তান সরকার রাজশাহী বিভাগের থেকে খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল এবং ঢাকা বিভাগের থেকে বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চল নিয়ে খুলনা বিভাগ গঠন করে ।

খুলনা বিভাগের প্রথম বিভাগীয় কমিশনার হিসাবে জনাব এম মঞ্জুর ইলাহিকে নিয়োগ দেওয়া হয় । তখনকার সময়ে খুলনা বিভাগের কশিনারের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারনে খুলনার পৌরসভা চেয়ারম্যান কুমুদ রঞ্জন ঘোষের বাড়িতে খুলনা বিভাগীয় অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো । এই স্থানটি ছিলো খুলনা সার্কিট হাউজের দক্ষিন পাশে ।

খুলনা বিভাগের নামকরণ

খুলনা বিভাগের নামকরণ করা হয় খুলনা জেলা সদরের নামে । লোক মুখে প্রচলিত আছে যে, এই অঞ্চল ভৈরব নদীর তীরে খুল্লেনেশ্বরী দেবীর মন্দির ছিলো । এই মন্দিরটি ছিলো খুলনা জেলা শহর থেকে প্রায় ১.৫ (দেড়) কিলোমিটার দুরে । আর এই খুল্লেনেশ্বরী দেবীর মন্দিরের নাম অনুসারে খুলনা অঞ্চলের নামকরণ করা হয় “খুলনা” । এই খুলনা মূল জেলা সদরের নাম থেকেই এই অঞ্চলের বিভাগীয় নাম হয় “খুলনা বিভাগ” ।

খুলনা বিভাগ কিসের জন্য বিখ্যাত?

বাংলাদেশের বর্তমান ৮টি বিভাগের মধ্যে খুলনা বিভাগ অন্যতম । এটি বাংলাদেশের দক্ষিন – পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত । বাংলাদেশের বৃহত্তর শহর ঢাকা জেলা এবং চট্টগ্রামের জেলার পর খুলনা জেলার অবস্থান । অর্থাৎ খুলনা বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর ।

খুলনা বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলে প্রবাহিত রুপসা ও ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত । এদেশের প্রাচীন মত নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা উল্লেখযোগ্য । খুলনা সাধারণত সুন্দরবন, গলদা চিংড়ি, নারিকেল ও সন্দেশের জন্য বিখ্যাত । এই অঞ্চল চিংড়ির কারনে সাদা সোনার দেশ হিসাবেও বিখ্যাত ।

খুলনা বিভাগের আয়তন

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুয়ায়ী খুলনা বিভাগের আয়তন ২২,২৮৫ বর্গ কিলোমিটার ও খুলনা বিভাগের জনসংখ্যা ১৫,৫৬৩,০০০ জন ।

খুলনা বিভাগের থানা সমূহ

খুলনা বিভাগ ১০টি জেলা নিয়ে গঠিত । এই ১০ জেলায় মোট থানা রয়েছে ৫৯টি । 

যথা - খুলনা জেলার থানা – ৯টি, বাগেরহাট জেলার থানা – ৯টি, যশোর জেলার থানা - ৮টি, সাতক্ষীরা জেলার থানা – ৭টি, নড়াইল জেলার থানা – ৩টি, মাগুরা জেলার থানা – ৪টি, কুষ্টিয়া জেলার থানা -৬টি, ঝিনাইদহ জেলার থানা – ৬টি চুয়াডাঙ্গা জেলার থানা – ৪টি, মেহেরপুর জেলার থানা – ৩টি । খুলনা বিভাগের থানা মোট ৫৯টি ।

অন্য পোস্টঃ

খুলনার আবহাওয়া

খুলনার গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া কিছুটা আদ্র ও শীতকালে মনোরম । খুলনার বাৎসরিক গড় তাপমাত্রা ২৬.৩ °সেলসিয়াস (৭৯.৩ °ফা) এবং মাসের তাপমাত্রা জানুয়ারীতে ১২.৪ °সেলসিয়াস (৫৪.৩ °ফা) এবং মে মাসে ৩৪.৩ °সেলসিয়াস (৯৩.৭ °ফা) এর মধ্যেই থাকে । খুলনায় বাৎসরিক বৃষ্টিপাত ১,৮০৯.৪ মিলিমিটার (৭১.২৪ ইঞ্চি) । খুলনায় বছরের মোট বৃষ্টিপাতে ৮৭ ভাগ সংঘটিত হয় মে এবং অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ।

খুলনা বিভাগের দর্শনীয় স্থান

খুলনা জেলার দর্শনীয় জায়গা ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – সুন্দরবন এবং সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন স্পট (করমজল, দুবলার চর, কটকা, হিরণ পয়েন্ট), খলিশপুর সত্য আশ্রম, মহিম দাশের বাড়ি, খানজাহান আলীর বড় দীঘি, গল্লামারী, চুকনগর, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি সৌধ, শিরোমণি, বকুলতলা, সেনহাটি, রাড়ুলী, পিঠাভোগ, দক্ষিণডিহি, কুঠিবাড়ি ইত্যাদি ।

খুলনা বিভাগের মানচিত্র

খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪
খুলনা বিভাগের মানচিত্র

খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর

খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর খুলনা জেলা শহর শিববাড়ির ট্রাফিক মোড়ে অবস্থিত জিয়া পাবলিক হলের পাশে অবস্থিত । ১৯৯৮ সালে খুলনার বিভাগীয় জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় । জাদুঘরটি পরিচালিত হয় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের আওতায় ও প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের তত্তাবধানে । আয়তনের দিক দিয়ে খুলনা জাদুঘর বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাদুঘর ।

খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে ঝিনাদহ এর বারোবাজার, যশোর জেলার ভরত ভায়না এবং বাগেরহাট এর খানজাহান আলীর সমাধিসৌধ খননের সময় প্রাপ্ত প্রাচীন আমলের নানান দুর্লভ জিনিস এখানে প্রদর্শিত হয় । এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রাচীন দুর্লভ নিদর্শন আছে এই জাদুঘরে ।

খুলনা বিভাগ সম্পর্কে তথ্য | খুলনা বিভাগ পরিচিতি ২০২৪
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার

খুলনা বিভাগীয় কমিশনা

মো. হেলাল মাহমুদ শরিফ (বিভাগীয় কমিশনার)

মোবাইল: ০১৭১৩৪০০৩৯৪ফোন

(অফিস): ০২৪-৭৭৭০৩০৩৫

ইমেইল: divcomkhulna@mopa.gov.bd

ফ্যাক্স: ০৪১-২৮৫০০৩৬

ব্যাচ (বিসিএস): ১৫

বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ: ১৫ জুন ২০২৩

খুলনা বিভাগী কমিশনারের কার্যালয়

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, খুলনা

নূরনগর, বয়রা, খুলনা ।

ওয়েব সাইট: http://www.khulnadiv.gov.bd/

মেইল এড্রেস: divcomkhulna@mopa.gov.bd

ফোন নাম্বার: ০৪১-২৮৫০০৩৫

প্রতিষ্ঠা কাল: ১৯৬০ সাল

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা জেলা মহানগরী থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাশে গল্লামারী এলাকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত । খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর আয়তন ১০৫.৭৫একর প্রায় ।

বাংলাদেশের একটি স্বনামধণ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় । খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা শহরের দক্ষিন অঞ্চলে অবস্থিত । খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ৪ জানুয়ারি ১৯৮৭ সালে একটি সরকারি গেজেটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত গৃহিতি হয় । এরপর ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় মাত্র ৪টি পাঠ্য এবং ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ।

বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি স্কুল ও দুইটি ইন্সিটিটিউট রয়েছে । এখানে বর্তমানে ৭ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিবছর ২৯টি পাঠ্য নিয়ে ভর্তি করানো হয় বা শিক্ষা নিয়ে থাকে । খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের এক মাত্র রাজনীতি মুক্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ।

খুলনা বিভাগের বিখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্র সমূহ

খুলনা বিভাগের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

যশোর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা মেডিকেল কলেজ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা বিভাগের বিখ্যাত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ

যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

মাগুরা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

খুলনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

খুলনা মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

সাতক্ষীরা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট

মাগুরা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ

বিসিএমসি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়

খুলনা বিভাগের বিখ্যাত স্কুল সমূহ

খুলনা জিলা স্কুল

খুলনা কলেজিয়েট স্কুল

করোনেশন গভ. গার্ল স্কুল,

সরকারি দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়

যশোর ক্যান্টেন্টমেন্ট পাবলিক স্কুল,

যশোর জিলা স্কুল

খুলনা বিভাগের বিখ্যাত কলেজ সমূহ

ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ

সরকারি বি. এল. কলেজ

সরকারী এম. এম. কলেজ

সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মাগুরা

সরকারি কে.সি কলেজ, ঝিনাইদহ

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ

দর্শনা সরকারি কলেজ

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ

শেষ কথা

আশা করি আজকের “কাঠবাদাম খাওয়ার ১০ উপকারীতা | কাঠ বাদামের গুনাগুন” আলোচনা আপনাদের ভালো লেগেছে । এই রকম আপডেট সমস্ত লেখা পেতে চোখ রাখুন “বেষ্ট ব্লগ বিডি” ব্লগে । এছাড়াও যদি আরও কোনও বিষয়ে লেখা পড়তে চান তাহলে আমাদের জানাতে পারেন ।


আরও পড়তে পারেনঃ কাঠবাদাম খাওয়ার ১০ উপকারীতা | কাঠ বাদামের গুনাগুন

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url